অনলাইন ব্যবসার সুবিধা অসুবিধা

অনলাইন ব্যবসা হোক আর অফলাইন ব্যবসা হোক প্রতিটি বিজনেসের মূলে একটা কথা তো তোমাকে মানতেই হবে, তা হলো  ব্যবসার সুবিধা অসুবিধা তার সাথে বিজনেসের  রিসার্চ ও অগ্রগতি প্রস্তুতি করা। যেকোন ব্যবসায় উদ্যোগ নেওয়ার পূর্বে এই কথায় নিজেকে বরণ করার জন্য আয়ত্ত করে যে “একজন উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীর জীবনে ‘সফলতার গল্প’ যেমন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্ভুল তেমনি ‘সফল না হওয়ারও’ সম্ভাবনা থাকে ।” কিন্তু এই বিষয়টি যদি তুমি বিজনেসের শুরু করার আগে ও পরে তার সাথে ব্যবসা চলাকালীন টাইম নির্ভুলভাবে প্রয়োগ করো। তবে তুমি যেকোন ব্যবসায় সফল হতে পারবে। যাইহোক ইন্টারনেটে ব্যবসা করার কয়েকটি অ্যাডভান্টেজ অসুবিধাও রয়েছে। তাই তোমার অনলাইন ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে এই নিবন্ধনটি একারণে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।  

অনলাইন ব্যবসা বা ই–কমার্স কি?

ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসা বা কমার্সকে সংক্ষেপে ই–কমার্স বলতে জানানো হয়ে থাকে। যদিও ই–কমার্স এর পূর্ণরুপ হলোঃ ইলেক্ট্রনিক কমার্স। যার বাংলা অর্থ হচ্ছে: ইলেক্ট্রনিক ব্যবসা। অর্থাৎ অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসায়িক লেনদেন, পণ্য ক্রয়–বিক্রয় করা তার সাথে বিনিময় ভিত্তিক যেকোন অ্যাডভান্টেজ ব্যবহার করাকে ই–কমার্স বলে। জগতের ইতিহাসে সরল পদ্ধতিতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার অপর নাম হচ্ছে ই–কমার্স। “অনলাইন কেন্দ্রিক ব্যবসায়িক লেনদেন” এর চেয়ে এই আধুনিক যুগে আর সহজ কোন পদ্ধতি থেকে পারে না।

আরেকটু বুঝিয়ে বলতে গেলে, ই–কমার্স হচ্ছে ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি যেমন ব্যক্তিগত কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, মোবাইল ফোন ফোন প্রভৃতি ব্যবহার করে ওয়েব ও ইলেক্ট্রনিক ডাটা আদান–প্রদানের মাধ্যম। যা সকল প্রকারের ভৌত এবং মডার্ন পণ্য ও সার্ভিস ক্রয়–বিক্রয় করাকে বোঝায়। এটি মূলত ইন্টারনেটে ব্যবসা পরিচালনার একটি স্মার্ট ডিজিটাল মাধ্যম যা গর্ভনমেন্টের বিভিন্ন ক্ষেত্রসমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধন, ব্যবসায়িক লেনদেন ও যোগাযোগ সহজীকরণ এবং সারাদেশে ব্যাপকহারে কর্মসংস্থানের চান্স সৃষ্টি করে। ক্রমবিকাশমান বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার কারণে ই–কমার্সের পরিধি এবং জনপ্রিয়তা বিশ্বজুড়ে বেড়ে চলেছে।

অনলাইন ব্যবসা বা ই–কমার্স কেন? 

আজকাল কক্ষে বসেই মানুষ ব্যবসা করছে। ব্যবসা করার এত  মাধ্যম এর আগে কোনো সময়েই আবিষ্কৃত হয় নি। যাইহোক, এখনকার দিনে ব্যক্তি বিনা পুঁজিতে ইন্টারনেটে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে। এই ব্যবসাটি যে কোন ধরনেরই হতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে এখনকার দিনে মানুষের সবথেকে বেশী বিচরণ তাই মানুষ সহজেই কাস্টমার খুঁজে পেতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজনেসের নামে একটা আইডি বা পেজ খুলে নিজের পণয়ের প্রচার চালিয়ে থাকে। কোন গ্রাহক প্রচারণা দেখে মুগ্ধ হয়ে পণ্য ক্রয় করে সেটার মউলয় ডিজিটাল ভাবেই পরিষধ করে থাকে। সময়মত ব্যবসায়ী কুরিয়ার সার্ভিস বা হোম ডেলিভারি করার মাধ্যমে ব্যবসায়ীর অর্ডার কৃত পণ্য তার বাড়ি দুয়ারে পৌঁছে দেয়। এসকল সুবিধার কারণে একারণে ই কমার্স ব্যবসায় যুগান্তকারী পাল্টানো এনেছে। 

ই–কমার্সের সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো কেমন?

গতানুগতিক ব্যবসায় মার্কেট বা বাজার হচ্ছে ১টি সুনির্দিষ্ট জায়গা যেখানে পন্য কেনা–বেচা করা হয়। তবুও ই–কমার্সে বা ইন্টারনেটে ব্যবসায় সুনির্দিষ্ট কোন জায়গার দরকার নেই, এটা হচ্ছে সর্বব্যাপী। অর্থাৎ এটি সব সময় সব জায়গায় সহজলভ্য।

তোমার মোবাইলে বা ল্যাপটপে বা অন্য কোন ডিভাইসে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে। যেকোনো জায়গায় বসে দ্রব্য ক্রয় বেচা করতে পারবে। আর এর সর্ব গ্রহণযোগ্যতার বিশেষ রিজন হলোঃ ই–কমার্স বা অনলাইন ব্যবসা কোনো সুনির্দিষ্ট সীমারেখা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না।

ই–কমার্সে বা অনলাইন ব্যবসায় গতানুগতিক ব্যবসার মত নির্দিষ্ট কোনো সীমারেখা বা ঠাঁই নেই। ইন্টারনেট ব্যবহার করে জগতের যে কেউ যে কোন প্রান্তে বসে হতে এই বিজনেসের সাথে জড়িত থেকে পারে। পণ্য ক্রয় বেচা করার জন্য পারে, অর্ডার দেওয়ার জন্য পারে। আসলে আস্ত বিশ্বের যত  ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের সবাইকে ই–কমার্সের বাজার হিসেবে ধরা যায়।

ই–কমার্স বা অনলাইন ব্যবসা একটি নির্দিষ্ট টেকনিক্যাল মানদন্ড মেনে চলে যার অর্থ একে ইন্টারন্যাশনাল মানদন্ড বলে যা সব দেশে সব জাতি দ্বারা গ্রহনযোগ্য ও স্বীকৃত। পক্ষান্তরে গতানুগতিক বিজনেসের মান অঞ্চল থেকে অঞ্চল বা দেশে ভেদে পরিবর্তীত হয়।

ব্যবসার তাৎপর্যপূর্ণ অংশ হলো পণ্যের বিজ্ঞাপন। অনলাইনের মাধ্যমে ওয়েব ওয়েবসাইটের সাহায্যে কোনো পণ্যের স্থিরচিত্র, অভিজ্ঞ, ভিডিও, এনিমেশনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উদাহরণসরূপ ফেসবুক, টুইটার, ইন্সট্রাগ্রাম এমনকি ইউটিউবেও আজকাল অতিশয় কম খরচে অ্যাডভারটাইজমেন্ট দেওয়া যাচ্ছে। এতে করে পণ্য বিপণনে যেমন কম খরচ পরে তেমনি এইরকম অধিক ব্যবহারকারীকে আকৃষ্ট করা পসিবল হচ্ছে। 

অনলাইনে ব্যবসা পরিচালনার সেরা বৃহৎ অন্তরায় হচ্ছে ক্রেতার বিশ্বাস। রিজন বিক্রেতা এক ধরেনের পণ্য শো করে আরেক ধরনের পণ্যও ক্রেতাকে ডেলিভারী দেওয়ার জন্য পারে। আজকাল প্রচুর অসাধু অনলাইনে ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট করে ইউজার কে প্রলুব্ধ করার জন্য ভালো সব বিপনণ কৌশল নির্ভর করে তাদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকাও নিয়ে থাকে তার সাথে কিছু দিন পরে ওয়েব সাইট বন্ধ করে দেয়। অনেক মন্দ ব্যবসায়ী আজকাল বারবার এই পদ্ধতি নির্ভর করে ক্রেতাকে ধোকা দিচ্ছে। যাইহোক, এসব দিক বাদ দিলে অধুনা অনলাইন ব্যবসা সেরা সর্বসেরা এক ব্যবসায়িক বাজার হিসেবে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।   

ই–কমার্সে অনলাইন টেকনোলজি হলো মিথস্ক্রিয়া যোগাযোগ। রিজন এটি দ্বিমুখী যোগাযোগ রক্ষা করে চলে। কিংবা গতানুগতিক টেকনোলজি; যেমন– ম্যাগেজিন, পত্রপত্রিকা, লিফলেট, পোস্টার, ব্যানার, মাইকিং করা, সিমিনার করা তার সাথে টেলিভিশনের সাহায্যে শুধুমাত্র একমুখি যোগাযোগ সম্ভব। অথচ ই–কমার্স বা অনলাইন টেকনোলজিতে দ্বিমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্ভব।

ইন্টারনেট বা ওয়েব ইনফরমেশনের পরিমান এতো ব্যাপক হারে প্রসারিত যে, তুমি  ভীষণ সহজেই তোমার পণ্যের কাস্টমারকে টার্গেট করতে পারবে। এবং তাদের কাছে তোমার পণ্যের মার্কেটিং ও প্রচার করার জন্য পারবে। তাছাড়া, ইন্টারনেট হতে স্বীকৃত তথ্য ক্রেতা, বিক্রেতা বা পরিদর্শক সবার নিকট সহজলভ্য। ই–কমার্স বা অনলাইন বিজনেসের প্রযুক্তি ইনফরমেশন সংগ্রহ, সংরক্ষণ, যোগাযোগ এবং প্রক্রিয়াকরণ দাম বৃথাব্যয় করে। একই সময়ে এসব তথ্য ইন্টারন্যাশনাল শীট মূল্যে সঠিক ও সময় যোগ্য হয়ে থাকে। যা ফলে এসব তথ্য হয় বেশি  ও বহু গুনগতমানসম্পন্ন।

অনলাই ব্যবসায়িক প্রযুক্তি ব্যক্তি ভেদ করার জন্য পারে। অর্থাৎ তুমি চাইলেই, তোমার কোনো পণ্য বা দ্রব্য বিশেষ কোনো  বা গোষ্ঠীর জন্য উন্মুক্ত রাখতে পারবে। আবার নির্ভুল একইভাবে, ভোক্তা বা ক্রেতারাও ইচ্ছে করলেই কোনো বিক্রেতাকে সহজেই এড়াতে পারে। ফলে ইনফরমেশনের বহুল্যতা এবং অপ্রয়োজনীয় ক্রয়কারী বা বিক্রেতার সংখ্যা এইখানে ইজিলি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। 

এই স্মার্ট টাইমে সকল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান অনলাইন ব্যবসাকে একটা বৃহৎ ব্যবসায়িক জায়গা হিসেবে বিবেচনা করছে। একারণে অধিকাংশই অফলাইনে ব্যবসা করার পাশাপাশি অনলাইনেও ব্যবসা পরিচালনা করছে। কেউ কেউ আবার অনলাইন কেই তাদের বিজনেসের শ্রেষ্ঠ বাজার হিসেবে ধরে নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। সে যাই হোক না কেনো নতুন এই ব্যবসায়িক নিয়মে বিক্রেতা ক্রেতার বিশ্বাসযোগ্যতা সঠিক থাকলে এই ব্যবসায়িক বাজার হয়ে উঠতে পারে সবথেকে ব্যবসার সর্বসেরা মাধ্যম।

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার উপায়